স্ত্রীর দুধ পান করা যাবে কি? স্ত্রীর দুধ পান করলে কি স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে? | শায়খ আহমাদুল্লাহ | Shaikh Ahmadullah
প্রশ্নঃ স্ত্রীর বুকের দুধ পান করে ফেললে কি স্বামীর জন্য স্ত্রী হারাম হয়ে যায়?
নিজের স্ত্রীর বুকের দুধ খাওয়ার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি?.
এখানে উল্লেখ্য যে,আমার একটি নবজাতক রয়েছে এবং সে খাওয়ার পরেও দুধ উদ্বৃত্ত্ব থেকে যায়…
বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব.
জবাব:
بسم الله الرحمن الرحيم
নিজের স্ত্রীর দুধ পান করলে স্ত্রী স্বামীর উপর হারাম হয়না।
কারণ সর্বোচ্চ ২বছর বয়সে দুধ পান করলে দুধ মায়ের সম্পর্ক স্থাপন হয়।
এর পর পান করলে হয়না।
তাই স্বীয় স্ত্রীর দুধ পান করার দ্বারা আপনার স্ত্রী আপনার উপর হারাম হয়ে যায়নি।
কিন্তু স্ত্রী স্তনের দুধ পান করা একটি মারাত্মক গোনাহের কাজ।
একাজ থেকে বিরত থাকুন।
দলিল:
قوله تعالى
- وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلاَدَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ لِمَن
ْ أَرَادَ أَن يُتِمَّ الرَّضَاعَةَ (سورة البقرة-233
وفى رد المحتار-( ولم يبح الإرضاع بعد مدته )
لأنه جزء آدمي والانتفاع به لغير ضرورة حرام على الصحيح
(الدر المختار مع رد المحتار-كتاب النكاح، باب الرضاع-4/397
প্রামান্য গ্রন্থাবলী
১. সূরা বাক্বারা-২৩৩
২. সূরা আহকাফ-১৫
৩. ফাতওয়ায়ে শামী-৪/৩৯৭
৪. তাফসীরে মাযহারী-১/৩৫৬
৫. কেফায়াতুল মুফতী-৫/১৬২
প্রশ্নঃ স্বামী যদি স্ত্রীর দুধ পান করে থাকে,
তাহলে তাদের বিবাহ কি ভেঙ্গে যাবে?
-----------------------------------------------
উত্তরঃ সূরা নিসার ২৩ নং আয়াতের অর্থঃ
তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে তোমাদের
মাতা,কন্যা,বোন,ফুফু,খালা,ভ্রাতৃকন্যা,ভাগিনীকন্যা,
(এবং সে মাতা,যে তোমাদের স্তন পান করিয়েছে)
তোমাদের দুধবোন, তোমাদের স্ত্রীদের মাতা,
তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা-যারা তোমাদের লালন পালনে আছে।
যদি তাদের সাথে সহবাস করে না থাক, তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোণাহ নেই।
তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা, কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে।
নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকারী,দয়ালু।
এখন চিহ্নিত অংশের তাফসীরঃ
এ অংশে বলা হয়েছেঃ যেসব নারীর দুধ পান করা হয়,
জন্মধাত্রী মা না হলেও বিবাহ হারাম হওয়ার ব্যাপারে জননীর পর্যায়ভূক্ত এবং তাদের সাথে বিয়ে হারাম।
অল্প দুধ পান করুক বা বেশী,
একবার পান করুক বা একাধিকবার, সর্ববস্থায় তারা হারাম হয়ে যায়।
ফিকাহবিদগণের পরিভাষায় একে
"হুরমতে রেযাআত"বলা হয়।
তবে এতটুকু স্মরণ রাখা জরুরী যে,শিশু অবস্থায় দুধ
পান করলেই এই "হুরমতে রেযাআত" কার্যকারী হবে।
রাসুলুল্লাহ বলেনঃ
ইন্নামার রাদাআতা মিনাল মাযাআহ।
অর্থাত্, দুধ পানের কারণে যে অবৈধতা প্রমাণিত হয়,
তা সে সময়ে দুধ পান করলে হবে, যে সময় দুধ পান করে শিশু শারিরীক দিক দিয়ে বর্ধিত হয়।
(বোখারী ও মুসলিম)
ইমাম আবু হানীফার মতে এই সময়কাল হচ্ছে শিশুর
জন্মের পর থেকে আড়াই বছর বয়স পর্যন্ত।
ইমাম আবু হানীফার বিশিষ্ট শাগরীদ ইমাম আবু ইউসূফ ও ইমাম মুহাম্মদসহ অন্যান্য ফিকাহবিদগণের মতে
মাত্র দুই বছরের ভিতরে দুধ পান করলে অবৈধতা প্রমাণিত হবে।
কোন বালক বালিকা যদি এবয়সের পর কোন স্ত্রীলোকের পান করে,
তবে এতে দুধ পানজনিত অবৈধতা প্রমাণিত হবে না।
সুতরাং স্বামী স্ত্রীর দুধ পান করলে বিবাহ ভঙ্গ হবেনা।
কারণ,
যেহেতু স্বামীর বয়স ২ বা আড়াই বছরের উর্ধ্বে।
এব্যাপারে একটি মাসআলাঃ
ফাতওয়ায়ে আলমগীরির ১ নং খন্ড ৩৪৪ নং পৃষ্ঠায়
ও
হযরত আশরাফ আলী থানভী তাঁর গ্রন্থ
"বেহেশতি জেওর"
এর ৪র্থ নম্বর খন্ড ১৮ নং পৃষ্ঠায় লিখেছেনঃ-
যুবক স্বামী যদি স্ত্রীর দুধ পান করে তাহলে স্ত্রী তার মা হবেনা,
তার জন্য হারাম হবেনা ঠিকই কিন্তু এরূপ করা ভীষণ পাপের কাজ।
কেননা, দু'বছর বয়সের পর মানুষের দুধ পান করা পুরোপুরি হারাম।
সন্তান মায়ের স্তনবৃন্ত চুষে দুগ্ধপান করে।
মিলনের পূর্বে স্ত্রীর স্তনবৃন্ত চোষণ করা কি স্বামীর জন্য বৈধ?
পরন্ত অসাবধানতায় যদি পেতে দুধ চলে যায়, তাহলে কি স্ত্রী মায়ের মত হারাম হয়ে যাবে?
স্বামীর জন্য বৈধ তার স্ত্রীর স্তনবৃন্ত চোষণ করে উভয়ের যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করা।
সে ক্ষেত্রে যদি স্ত্রীর দুধ তার পেটে চলে যায়, তাহলে তাতে কোন প্রকার ক্ষতি হয় না এবং স্ত্রী তার মা হয়ে যায় না।
কারণ দুধ পানের মাধ্যমে হারাম হওয়ার যে সব শর্ত আছে, তা হলঃ
১। দুই বছর বয়সের মধ্যে দুধ পান করতে হবে।
সুতরাং তার পরে বড় অবস্থায় দুধ পান করলে হারাম হবে না।
২। পাঁচবার পান করতে হবে।
সুতরাং ২/৪ বার পান করলে কোন প্রভাব পড়ে না।
আর বড় অবস্থায় ৫ বারের বেশী পান করলেও কোন ক্ষতি হয় না।
(ইবনে বায, ইবনে উষাইমীন)
আল্লাহপাক সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করুন।
আমীন ছুম্মা আমীন.........
=================================================
আসসালামু আলাইকুম,
১) স্ত্রীর দুধ খাওয়া হারাম এই কথা বলার/জানার পরো কোন স্বামী যদি স্ত্রীর দুধ পান করে, তাহলে ওই স্ত্রী কি স্বামাঈর জন্য হারাম হয়ে যাবে?
২) হারাম অথবা ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে এমন কাজকে হারাম অথবা নিষেধ মনে না করে অথবা গাফলতি করে ওই কাজ যদি করা হয় তাহলে ওই ব্যক্তি কি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে, এবং বিয়েও কি বাতিল হয়ে যাবে?
এই পরিস্থিতিতে করণীয় কি হবে?
১) স্ত্রীর দুধ খাওয়া হারাম এই কথা বলার/জানার পরো কোন স্বামী যদি স্ত্রীর দুধ পান করে, তাহলে ওই স্ত্রী কি স্বামাঈর জন্য হারাম হয়ে যাবে?
২) হারাম অথবা ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে এমন কাজকে হারাম অথবা নিষেধ মনে না করে অথবা গাফলতি করে ওই কাজ যদি করা হয় তাহলে ওই ব্যক্তি কি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে, এবং বিয়েও কি বাতিল হয়ে যাবে?
এই পরিস্থিতিতে করণীয় কি হবে?
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
2239 নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,
"মানুষের
জন্য মানুষের দুধ খাওয়া হারাম।শুধুমাত্র বিশেষ প্রয়োজনে শিশুর জন্য মায়ের
দুধকে হালাল রাখা হয়েছে।সুতরাং স্বামীর জন্য স্ত্রীর দুধ পান করা হারাম।এ
ব্যাপারে প্রায় সকল উলামায়ে কেরাম একমত।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।"(জাওয়াহিরুল
ফিকহহ-৭/৪৬)
(১)স্ত্রীর দুধ খাওয়া হারাম।কেননা
দুধ মানুষের শরীরের অংশ।এটা জানা সত্বেও যদি কোনো স্বামী তার স্ত্রীর দুধ
পান করে নেয়,তাহলে ঐ স্ত্রী যদিও তার স্বামীর জন্য হারাম হবে না।তবে এমন
কাজ সর্বদা হারাম বলেই বিবেচিত হবে।
(২)জেনেবুঝে
কোনো হারামকে হালাল মনে করা এবং হালালকে হারাম মনে করা স্পষ্টত কুফরী।এর
জন্য অবশই ঈমান নবায়ন করতে হবে।কালিমা পড়ে ঈমানকে নবায়ন করতে হবে।
(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)
--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ